সৌরকোষ (Solar cells) কি কেনো কিভাবে আবিষ্কার হলো।

 সৌরকোষ


বিক শক্তির উৎস খুঁজতে যখন মানুষ পার্থিব সমস্ত শক্তির মূল উৎস সূর্যের Wালোককে কাজে লাগাতে যবান হয়, তখনই তার মনে প্রশ্ন আসে ব্যাটারি তথা রাসায়নিক কোষ থেকে, রাসায়নিক শক্তি যদি বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় এবং সেই বিদ্যুৎশক্তি আলােকশক্তিতে রূপান্তরিত হয়, তাহলে সূর্যের আলােকশক্তিকে কেন বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যাবে না ? কেননা শক্তির তাে ক্ষয় হয় না, এক শক্তি থেকে আর একটি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।



ততদিনে তড়িগ্রবাহ সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা বুঝতে পেরেছেন, কোন বর্তনীতে তড়িগ্রবাহ তখনই চলে, যখন বর্তনীর তার ও রােধের মাধ্যমে ইলেকট্রন প্রবাহ একদিক থেকে অন্যদিকে অব্যাহত থাকে। অতএব ঐ কাজটা যদি রাসায়নিক শক্তির পরিবর্তে আলােকশক্তি দ্বারা সম্পন্ন করানাে যায়, তাহলে অবশ্যই সফলতা আসবে।


তড়িৎপ্রবাহের নির্দিষ্ট নিয়মও আছে। পাইপ যােগে উচ্চ জলাধার থেকে নিচের জলাধারে স্থানান্তরিত করতে গেলে যেমন একটা প্রবাহ বজায় থাকে তেমনই বিভব পার্থক্য থাকলে উচ্চবিভব থেকে, নিম্নবিভবের দিকে ইলেকট্রনের প্রবাহ হয়। আর তখনই উৎপন্ন হয় বিদ্যুৎ।


সূর্যের আলােকের সাহায্যে বিভব প্রভেদ সৃষ্টি করার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা দৃষ্টিনিক্ষেপ করলেন জার্মেনিয়াম, সিলিকন, সেলেনিয়াম প্রভৃতি অর্ধ-পরিবাহীর উপর। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এদের উপর আলাে পড়লে পরিবাহিতা বেড়ে যায়। অর্থাৎ অর্ধ-পরিবাহী আলােক শােষণ করলে সেখানে ইলেক্ট্রনের সংখ্যা ও ঘনত্ব দুই-ই বেড়ে যায়।


শুরু হলাে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সত্য-সত্যই দেখা গেল, অর্ধ-পরিবাহীর কোন একটি স্থানে সূর্যের আলােক ফেললে আলােকিত অংশে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং কম ঘনত্বযুক্ত স্থানের দিকে প্রবাহিত হয়।



উপরােক্ত পদ্ধতিতে সৌরকোষ সৃষ্টি হল বটে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বেশী তড়িচ্চালক বলের সৃষ্টি করতে পারলেন না। মাত্র ০-২ থেকে ৩৩ ভােল্টের মত। এরপর ভাল অর্ধ-পরিবাহী খুঁজতে গিয়ে তাঁরা সিলিকনকে ব্যবহার করেন। এতে পূর্বাপেক্ষা বেশী তড়িচ্চালক বল সৃষ্টি হলাে ঠিকই, কিন্তু দৈনন্দিন কাজে এবং ঘরকে বৈদ্যুতিকীকরণ করতে প্রয়ােজন হলাে অসংখ্য সৌরকোষের সমন্বয়। এতে খরচ অনেক বেশী এ কারণে, সৌরকোষ এখনও জনপ্রিয় হতে পারেনি।

কেবলমাত্র কৃত্রিম উপগ্রহে এদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং ভাল ফলও পাওয়া


গেছে।


বিজ্ঞানীরা বসে নেই। অল্প খরচে সৌরকোষ তৈরি করার জন্য তাঁরা এখনও গবেষণা করে চলেছেন এবং অনেকটা এগিয়েও গেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post