থার্মোমিটার (Thermometer)কি কোনো কিভাবে আবিষ্কার হলো।

 থার্মোমিটার


যখন তাপমান যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়নি, তখন কোন বস্তু উষ্ণ কী শীতল, হাতের স্পর্শে অনুভব করা হতাে। স্পর্শের দ্বারা কোন বস্তুর সঠিকভাবে তাপ নিরূপণ করা যায় না। তাই উষ্ণতা নির্ণয় করার জন্য হয়েছিল যন্ত্রের পরিকল্পনা। কারণ মানুষ ভুল করতে পারে, কিন্তু বিকল না হলে যন্ত্র ভুল করে না। তাপমাত্রা নির্ণয়ের প্রথম প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন সেই ইটালী দেশের সুবিখ্যাত বৈজ্ঞানিক গ্যালিলিও। তিনি একটা যন্ত্রও নির্মাণ করেছিলেন, তবে সে যন্ত্রটি যে কেমন ছিল, সে কথা বলা আজ বড় শক্ত।



গযালিলিও পর অপর কোন বিজ্ঞানী উত্তর ক কোন তৈরি করেছিলেন কিনা সঠিক কিছু জানা যায় না। শেষে সপ্তদশ শতাদীর মধ্যভাগে সেই ইটালী দেশেই এক বিজ্ঞানী তৈরি করেছিলেন বিশেষ ধরতে এক তপন যন্ত্র। বিজ্ঞানীর নাম ফোরেস। তিনি কাচ নির্মিত একটি সরু নলের মধ্যে অ্যালকোহল রেখে থার্মোমিটালে ব্যবহার করতেন। তবে তাতে নাগ কাটা ছিল না।


প্রকৃত খর্মোমিটার বলতে যা বােঝায়, সেট প্রথম আবিষ্কার করার গৌরব অর্জন করেছেন গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট। তাঁর থার্মোমিটারটিও ছিল কাচ নির্মিত। তবে ফ্লোরেন্সের মত অ্যালকোহল ব্যবহার না করে তিনি পারদকে ব্যবহার করেছিলেন এবং মোমিটার ও কেটেছিলেন।



কারনহাইটের ধারণা ছিল মনুষ্য দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১৬ ত্রিী এবং পানি ৩২° ডিগ্রীতে জমে বরফে পরিণত হয়। পানি ফুটে বলে পরিণত হওয়ার অবস্থাকে ধরেছিলেন ২১২° ডিগ্রী। তাপমাত্রার সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ মান তিনি নির্ধারণ করেছিলেন থার্মোমিটাকে ফের তুহির মধ্যে রেখে এবং ফুটন্ত পানির বাশের মধ্যে ধরে রেখে। এই দুই তাপমহাকে নির্দিষ্ট রেখে আজও থার্মোমিটারের দাগ কাটা হয়ে থাকে। ফারেনহাইটে থার্মোমিটারের ঘর সংখ্যা ১৮০।


ফারেন হাইটের পর রোমার নামে এক বিজ্ঞানী দুই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা অর্থাৎ হিমাঙ্ক ও স্ষুটনান্ককে যথাক্রমে ০ ডিগ্রী এবং ৮০° ত্রিী ধরে আর এক ধরণের মান প্রচলন করেন। সেই মানটি আবিষ্তার নামানুসারে “ব্রোমারের মান নামে পরিচিত। তাপমাত্রার সেন্টিগ্রেড মানের প্রচলন করেন সুইডেনের এক বিজ্ঞানী।


নাম তাঁর সেলসিয়াস। তিনি হিমাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক ০ ডিগ্রী এবং ১০০ ত্রিী ধরে অন্য একটি মানের প্রবর্তন করেন। সেই মানটিই বহুল প্রচলিত সেন্টিগ্রেডমান। কখনও কখনও আবিষ্কর্তার নামানুসারে এই মানকে বলা হয় - সেলসিয়াস।


উষ্ণতা পরিমাগে সেন্টিয়ে মাটি বেশী गानহায় করা হয়। অbt শ্যা । তাপমাত্রা নির্ণয়ের জন্য যে থার্মোমিটার শাখা করি, সেটি গেইটের নি। অনুসারে দাগ কাটা। বর্তমানে আবার সেই গার্মোমিটায়ে । শাট। গুখি সেন্টিগ্রেডের, মান অনুযায়ী।


থার্মোমিটারের অন্য প্রয়ােজন হয়। সার্ণল সা এ faqfণশি' একট। কাচের নল। প্রথমে কাচ নলের এক পাশ গলিয়ে নিয়ে খ গ শো ' দিয়ে। একটা কুন্ড গ্রন্তুত করে নেওয়া হয়। পরে কুণ্ডটিকে পিরপূর্ণ করা পথ খােলা মুখটাকে গলিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৩ারাপ থার্মোমিটারের উপরে দাগ কাটার গালা। পূর্বের মত প্রথমে বরফ কুটির মধ্যে কুণ্ডটিকে স্থাপন করে ও পরে ফুটন্ত জলের বাষ্পে থার্মোমিটারকে ধরে রােখ পুটি স্থিরা নির্ধারণ করা হয়। সেন্টিগ্রেড থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে এই স্থিরাঙ্ক ০° 6ি]] এবং ১০০° ডিী। তারপর দুই স্থিরাদ্কের মধ্যবর্তী স্থানকে একশ সমান ভাগে ভাগকরে দাগ কাটা হয়।



থার্মোমিটারের তরল হিসাবে পারদ এবং আলকোহল উভয়কেই এহণ করা হয়ে থাকে। তবে পারদ ব্যবহারের সুবিধা বেশি। পারদ ঢকমকে, কাচের দেওয়াল ভিজায় না এবং তাপমাত্রার পরিবর্তনে পারদের আয়তনের পরিবর্তন গুণ নিয়মানুগ হয়। তাছাড়া প্রসারিত হওয়ার জন্য পারদ বস্তু থেকে অতি সামান্য তাপ গ্রহণ করে। আরও সুবিধে আছে। পারদ ৩৫০° f%ী সেন্টিঙে গুপ্তা বাষ্পীভূত হয়-৩৯° ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে জমে যায় বলে-৩৯° থেকে ৩৫০° ভেতর যে কোন তাপমাত্রাকে মাপা সম্ভব হয়ে থাকে।


নিম্ন তাপমাত্রা নির্ণয়ের কাজে আলকোহলের একটু সুবিধা আছে।


অ্যালকোহলের নিমাঙ্ক-১৩০° ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এবং স্ফুটনাঙ্ক মাত্র ৭৮.৫° সেন্টিগ্রেড। তাই অ্যালকোহল থার্মোমিটারের দ্বারা ৭৮.৫° ডিগ্রী সেন্টিমেডের উপরের তাপমাত্রা নির্ণয় করা না গেলেও নিচের দিকে-১৩০৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত তাপমাত্রা মাপা যায়। কিন্তু অ্যালকোহল জলের মত স্বঞ্চে বলে ওকে ঠিক ঠিক কাচ নলের মধ্যে দেখা যায় না । সেইজন অ্যালকোহলকে একটু রপ্ত করে নিতে হয়।


বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন আবহাওয়ার উষ্ণতা জানার জন্য চরম ও অধম থার্মোমিটার, শরীরের তাপ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারী থার্মোমিটার, ইত্যাদি । ডাক্তারী থার্মোমিটারের একটু বৈশিষ্ট্য আছে। ওর ভেতরের রন্ধ্র পথটা কুন্ডের উপরে একটু বাঁকান থাকে। তার জনা মানুষের দেহ থেকে থার্মোমিটার বের করে আনলে বাইরের তাপমাত্রা কম থাকা সত্ত্বেও পারদ বাঁকানাে পথ দিয়ে সহজে নেমে আসতে পারে না। অথচ প্রসারিত হতেও তার কোন অসুবিধা হয় না।


আজকাল অতিশয় উচ্চ ও নিম্ন তাপমাত্রা মাপার জন্য বহু থার্মোমিটার আবিষ্কৃত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথমে গ্যাস থার্মোমিটারের নাম করা যেতে পারে। ১৮২৮ খ্রীষ্টাব্দে বিজ্ঞানী প্রিন্সেপ এই থার্মোমিটার আবিষ্কার করেন। এটি উচ্চ তাপমান যন্ত্র-নাম "পাইরােমিটার"। পরবর্তীকালে ডেভি, রেনাে, ক্যালেন্ডার প্রভৃতি বিজ্ঞানীরা এই থার্মোমিটারের যথেষ্ট উন্নতি সাধন করে গেছেন।



সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে একটা সীমারেখা আছে। অর্থাৎ-২৭৩° ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের তলায় আমরা তাপমাত্রার কল্পনা করতে পারি না। ঐ তাপমাত্রাকে বলা হয় চরম শূন্য। এত নিম্ন তাপমাত্রায় অ্যালকোহল থার্মোমিটার অচল। তাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে অর্ধপরিবাহী বা সেমিন-ডাকটিং পদার্থ, যেমন পরিশুদ্ধ অঙ্গার নির্মিত বিদ্যুৎরােধক ব্যবহার করা হয়।


উচ্চ তাপমাত্রা সম্পর্কে কোন পরিসীমা নেই। গবেষণাগার বিস্তৃত পরিবেশে অতি অল্পক্ষণের জন্য হলেও তিন হাজার ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত তাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। পারমাণবিক বােমা বিস্ফোরণের দ্বারা পৃথিবী পৃষ্ঠে কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপ সৃষ্টি হয়। সূর্য দেহের আভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ২০ মিলিয়ন ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। মহাশূন্যে এমন সব নক্ষত্র আছে, যাদের দেহের তাপমাত্রা সূর্য অপেক্ষাও অনেক বেশী। এত উচ্চ তাপমাত্রা মানুষের পক্ষে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তবে এক হাজার ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত তাপমাত্রা অতি সহজেই নির্ণয় করা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযােগ্য হচ্ছে প্লাটিনাম থার্মোমিটার। অতি উচ্চ ও নিম্ন তাপমাত্রার সূক্ষ্ম পরিমাপের জন্য থার্মোকাপল এবং থার্মোকাপাইল ব্যবহার করা হয়। থার্মোপল নির্মাণের জন্য তামা ও কনষ্ট্যানটিন নামক মিশ্র ধাতুর তার, মলিবডেনাম ও টাস্টেন তার প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। থার্মোকাপল -২০০° ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে হাজার ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত তাপমাত্রাকে পরিমাপ করতে পারে।

Post a Comment

Previous Post Next Post