আলকাতরা(Tar) কি কেনো কিভাবে আবিষ্কার হলো।

 আলকাতরা


খনি থেকে উত্তোলিত কয়লায় নানাবিধ অশুদ্ধি থাকে। জ্বালানীর কাজে ঐ কয়লাকে ব্যবহার করতে হলে তাকে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। কিন্তু পােড়ানাের সময় উৎপন্ন হয় প্রচুর গ্যাস। প্রথমে জন ক্লেট্যান এবং রবার্ট বয়েল নামে দুজন বিজ্ঞানী ঐ গ্যাসটির পরিচয় জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।



ইংরাজী ১৬৬০ সাল। দু'জন বিজ্ঞানীই কয়লা পােড়ানাের ফলে গ্যাসকে একটি নলের ভেতর দিয়ে চালিত করে ঠান্ডা করলেন। অবাক হলেন নলের ভেতরে এক রকম বিশ্রী এবং কুচকুচে কালাে তরল পদার্থকে জমতে দেখে। তরলটি বেশ দুর্গন্ধযুক্তও। তবু তাঁরা এর প্রকৃতি সম্বন্ধে নানা প্রকার গবেষণা আরম্ভ করলেন, কিন্তু বিশেষ কিছু আবিষ্কার করতে পারলেন না।


দেখতে দেখতে ক্লেট্যান এবং বয়েলের তৈরী সেই কালাে তরটার কথা বিজ্ঞানী মহলে ছড়িয়ে পড়ল। দলে দলে বিজ্ঞানী হরেক রকমের যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে গেলেন গবেষণা করতে। শেষে ডবলিউ, এইচ. পারকিন নামে এক বিজ্ঞানী তরলটির বিস্তৃত পরিচয় প্রদান করতে সক্ষম হলেন এবং ঐ বস্তুটির নানাবিধ গুখের কথা উল্লেখ কনলেন। এ তরলটির নাম আলকাতরা। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন প্রায় তিনশ রকমের জিনিস মেশানাে খাকে আলকাতরার মধ্যে। ওকে এত বিশ্রী দেখাবার কারণ, কার্বন পরমাণুুলো বিজিত অবস্থায় মিশে থাকে। আলকাতরাকে নিয়ে আজও বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিরাম নেই।



বর্তমান পৃথিবীর প্রায় সব দেশ আলকাতরাকে কাজে লাগিয়ে বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। আমেরিকা, কানাডা, বৃটেন এ বিষয়ে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। ভারতে কয়লার পরিমাণ যদিও নেহাৎ কম নয়, তবুও কয়লা থেকে প্রয়ােজনানুযায়ী আলকাতরা উৎপাদন করা হচ্ছে না। বৃটেন যেখানে দুশ পঞ্চাশ লক্ষ টন আলকাতরা উৎপন্ন করে, সেখানে ভারত উৎপন্ন করে পঞ্চাশ লক্ষ টনের মত। ভারতের তৈরি প্রায় সব আলকাতরাই ব্যয় হয় রাস্তা নির্মাণের কাজে। আলকাতরা থেকে মূল্যবান জিনিসগুলি তেমন আহরণ করা হচ্ছে না।


Post a Comment

Previous Post Next Post