চকোলেট(Chocolate) কি কেনো কিভাবে আবিষ্কার হলো

 চকোলেট


আহা কী মিষ্টি আর কী মধুর গন্ধ! চকোলেট তৈরী হয় চিনি, গুঁড়াে দুধ এবং সুগন্ধি মশলা সহযােগে। কিন্তু আরও একটি জিনিস থাকে, যার নাম অনেকেই জানে না। অথচ চকোলেটর মূল উপাদান ঐটিই-এক ধরনের গাছের বীচি। গাছটার নাম ক্যাকাও। ক্যাকাও গাছের আদি বাসস্থান উত্তর ও মধ্য আমেরিকায়। বিষুবরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে ২৫° অক্ষাংশের মধ্যে উষ্ণ ও আর্দ্র অঞ্চলে গাছটা ভালাে জন্মায়। এখন আমেরিকা থেকে বীজ এনে অন্যত্র চাষ করা 

হচ্ছে চকোলেট তৈরির জন্য। ওর বৈজ্ঞানিক নাম থিওব্রামা ক্যাকাও। এরা-তিন ধরণের। গাছগুলাে প্রায় ৩০ ফুটের মত লম্বা হয়, ডালপালাগুলাে অনেকটা লালরঙের এবং পাতাগুলাে সবুজ। প্রায় ১৫ বছর বয়স হলে গাছে ফল ধরতে শুরু করে। ফল ধরে বছরে দুবার। ফলগুলো আকারে বেশ বড় সড়। এক একটার ওজন গড়ে ৫০০ গ্রামের মত। বীচি থাকে ৩০টি থেকে ৪০টি। শাসের ভেতর থেকে বীচিগুলােকে খুবলে খুবলে বার করে নিতে হয়। হালকা বাদামী রঙের ঐ বীচিগুলাে থেকেই তৈরি হয় চকোলেটের উপাদান।



১৬৫৭ খ্রীষ্টাব্দে আমেরিকা থেকে ক্যাকাও বীচি সংগ্রহ করে প্রথম লন্ডনেই তৈরি হয় কেক এবং এর রহস্য গােপন না রেখে প্রকাশ্যেই বিক্রি করা হয়। ফ্রান্স কিন্তু ঐ বীচির মহিমা জানত না। সেখানে ক্যাকাও কেকের প্রচলন করেন সম্রাট চতুর্দশ লুইর পত্নী রাণী মারিয়া থেরেসা। ইনি স্পেনের রাজকন্যা ছিলেন এবং ছেলেবেলা থেকেই ক্যাকাও বীচির সরবতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।


সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত প্রচলন ছিল কেক থেকে সরবত বানিয়ে খাওয়া। ঐ সরবত গরম কিংবা ঠান্ডা ষাঁর যেমন অভ্যাস তেমনই খেতেন এবং যে কেউ ইচ্ছেমত মুখরােচক খাবারেও গুলে খেতেন। ওর চমৎকার রঙ, গন্ধ ও স্বল্প মাদকতা সবাইকে আকৃষ্ট করতাে। এই পান করার রীতিটা ইওরােপীয় দেশগুলােতেই একরকম সীমাবদ্ধ ছিল। ১৭২৮ খ্রীষ্টাব্দে ইংলন্ডের এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ওকে নিয়ে একটা বড় রকমের ব্যবসা ফাঁদলেন। কেক বিক্রি না করে চুষে চুষে খাওয়ার জন্য বানালেন চকোলেট। কেকের সঙ্গে দুধ, মিষ্টি মশলা ইত্যাদি মিলিয়ে তৈরি করা চকোলেট দুদিনেই বাজার মাৎ করে ছাড়লাে। চকোলেটের অদ্ভুত জনপ্রিয়তা দেখে এবার এগিয়ে এলেন লন্ডনের আর একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। আরও মুখরােচক চকোলেট উপহার দিলেন। ঐ প্রতিষ্ঠানই বিখ্যাত ক্যাডবেরি কোম্পানী। ক্যাডবেরি চকোলেট বলতে আজকে অনেকেই অজ্ঞান। অবশ্য এখন ঐ চকোলেট সব দেশেই তৈরি হচ্ছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post