কৃত্রিম পেট্রোলিয়াম
ইওরােপে তখন প্রথম যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠেছে। জার্মানীর শক্তির বহর দেখে সারা পৃথিবী স্তম্ভিত। কোথায় পেলাে জার্মানী এত শক্তি, আর কোথা থেকেই বা জোগাড় করলাে এত খনিজ তেল ও গোলাবারুদ? পেট্রোলিয়ামের উৎস ভূগর্ভস্থ খনি। খনি থেকে উত্তোলিত তেল থেকে
আংশিক পাতনের দ্বারা পেট্রোলিয়াম সংগ্রহ করতে হয়। গাড়ি, মােটর,
কলকারখানা প্রভৃতিকে সচল রাখতে খনিজ তেল একেবারে অপরিহার্য।
জামনিীতে আবার পেট্রোলিয়াম পাওয়া যায় না।
দীর্ঘকাল যুদ্ধ চলার পরও জার্মানী এতটুকু দমলাে না। সমানে খরচ করে চললােতল, গােলাবারুদ ইত্যাদি। তখন কী আর করে মিত্রশক্তি! সর্বশক্তি নিয়োগ করে অনেক কষ্টে জার্মানীকে বশে আনলাে।
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেল। কিন্তু প্রশ্ন থেকে গেল। অনুসন্ধানে দেখা গেল, কয়লার উপর উচ্চতাপে এবং অনুঘটকের সংস্পর্শে হাইড্রোজেন চালনা করে পেয়েছিল পেট্রোলিয়ামকে। অপরপক্ষে অ্যামােনিয়াকে লাভ করেছিল জলীয় বাষ্প থেকে ও বাতাস থেকে যথাক্রমে এক আয়তন ও তিন আয়তন নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে নেওয়ার পর দুশ বায়ুমন্ডল চাপে ৫৫০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় লৌহ অনুঘটকের সংস্পর্শে চালিত করে। (অনুঘটক হচ্ছে এমন পদার্থ-যা নিজে রাসায়নিক ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে না অথচ ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত অথবা মন্দীভূত করে। যদিও যুদ্ধের জন্য জামানী উপরােক্ত দুটি পদ্ধতিকে আবিষ্কার করেছিল, তবুও এর ফল হয়েছে সুদূরপ্রসারী। যে কোন দেশ তেলের চাহিদা কৃত্রিমভাবে প্রস্তুতির মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে পারে। আর অ্যামােনিয়া? বিস্ফোরকের জন্য সেদিন ওর আবিষ্কার হলেও ফল হয়েছে সুদূর প্রসারীর। আজকে এত অ্যামােনিয়ার চাহিদা যে, কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করার উপায় আবিষ্কৃত না হলে মানুষকে প্রচন্ড অসুবিধায় পড়তে হতাে। বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লব তাহলে আসততা না।
