টেলিফোন ( Telephone) আবিস্কারেরে কাহিনী ( Discovery story ) sohel hossain

ষােল বছরের এক তরুণ নাম তার আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল । বােল্টন। শহরে এক ধনীর বাড়ীতে গৃহশিক্ষকের কাজ করতেন।

 | সে সময় সবেমাত্র টেলিফোন আবিস্কৃত হয়েছে, অথচ টেলিগ্রাফের মাধ্যমে। কেবলমাত্র খবরের সংকেতকে পাঠিয়ে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। চাইলে, মানুষের কণ্ঠস্বর সোজাসুজি প্রেরণ করতে। তাই অনেকেই শুরু করে দিয়েছে। গবেষণা ।

। তরুণ গৃহশিক্ষকটির বিজ্ঞানের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ ছিল এবং টেলিগ্রাফের [ তিনি ভালভাবেই জানতেন। তারও একদিন ইচ্ছা হল,তারের মাধ্যমে।মানুষের  কথাকে প্রেরণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা করতে।

 অনেক ভেবে যাঁর ভাল ছিল না । আর্থিক অবস্থা তার ভাল ছিল না। অথচ গবেষণার নেশা ছিল প্রবল।। অনেক ভেবে চিন্তে যার বাড়ীতে শিক্ষকতা করতেন, একদিন তাঁকেই অনুরােধ। জানালেন।

 ভদ্রলােকের মনটি ছিল ভাল। বিনা ভাড়ায় নিচের তলায় একটা ঘর দিলেন, সেইসঙ্গে কিছু টাকাকড়িও। তরুণ গ্রাহাম বেল বাজার থেকে কিনে আনলেন বৈদ্যুতিক ব্যাটারি, লোহা ও তামার পাত, নানা ধরনের তার, পেরেক, ইত্যাদি। হরেক রকমের জিনিস। ভদ্রলোকের দেওয়া টাকা তা নিঃশেষ হলে, অধিকন্তু। নিজের যা ছিল সম্বল-তাও গেল ফুরিয়ে।

 দিন যায় । তার গবেষণার এতটুকুও ছেদ পড়ে না। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল তবুও গবেষণায় বিরাম নেই বা উৎসাহেও এতটুকু ভাঁটা পড়ে না। হয়তো খেয়াল ছিল না তার। খেয়াল হলাে সেদিন যেদিন ঘরের মালিক বললেন ঘর ছেড়ে দিতে।

 দিশেহারা হয়ে উঠলেন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। সত্যই তাে, কয়েক বছর গত হয়ে গেছে। এতকাল ভদ্রলোকের ঘরের প্রয়োজন ছিলনা,আজ। তার দরকার হয়েছে। ঘর ছাড়তেই হবে তাঁকে। কিন্তু কী করবেন তিনি? একমাত্র মনের জোরে সম্বল করে বোস্টন শহরে একটি ঘর ভাড়া করে উঠে এলেন। যত বন্ধু-বান্ধব ছিলেন সবাইকে আর্থিক সাহায্যের জন্য জানালেন অনুরােধ। সৌভাগ্যক্রমে লাভ করলেন এক গবেষণা-পাগল বন্ধুকে। প্রচুর টাকা পয়সার মালিক ছিলেন বন্ধু।

 দুই তরুণ পুনরায় নিমগ্ন হলেন গবেষণায় । ততদিনে অবশ্য গ্রাহাম বেল। অনেকখানি এগিয়েছিলেন। তাঁর ধারণা হয়েছিল, অতি অল্পকালের মধ্যেই সাফল্য আসবে। এবার সহযােগী লাভ করে কাজটা দ্রুত হতে লাগলাে ।

 একদিন একটি লম্বা তারের দু প্রান্তে পাতলা লােহার পাতকে ভালভাবে বেধে, তার উপর তামার তার জড়ালেন। দু-প্রান্তে থাকলেন দুই তরুণ গবেষক। তারপর তারের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে এক পাশের একজন কথা বললেন এবং অপরজন শুনলেন। দেখা গেল, শব্দটা বড় ক্ষীণ। ব্যাপারটা মনঃপুত না। হলেও উৎসাহ লাভ করলেন । নিশ্চিন্ত হলেন এই ভেবে যে, মানুষের কণ্ঠস্বরকেও দূরে প্রেরণ করা সম্ভব হবে।

 পুনরায় পুরোদমে শুরু হলাে গবেষণা। কতদিন পর সার্থক হলাে তাঁদের উভয়ের প্রচেষ্টা। আবিস্কৃত হলো টেলিফোন। এই টেলিফোনে প্রথম বার্তা। বিনিময় করেছিলেন সেই দুই তরুণ একটা বাড়ীর উপরতলা ও নীচের তলা  থেকে।

 টেলিফোন আবিষ্কার করেন তিনি কিন্তু জীবদ্দশায় আদৌ সুখ্যাতি অর্জন। করতে পারেননি। বরং সবাই ব্যঙ্গ করেছিলেন তাকে। বাজে একটা খেলনা বলে। উপহাস করতেও বাধেনি কারুর। বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ যাঁরা-তাঁরা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, লোকটা বলে কি মানুষের মুখের কথা শ শ মাইল। দূরে পাঠিয়ে দেবে। লোকটার মাথায় গোলমাল নেই তো?

 কিন্তু আজ! টেলিফোন ছাড়া এক মুহূর্ত মানুষের চলে না। বিজ্ঞানের । অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদানরূপে স্বীকৃত এবং গ্ৰেহাম বেল ও চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন বিজ্ঞানে।

Post a Comment

Previous Post Next Post