হরিপদ কাপালি: একজন প্রান্তিক কৃষক, বিজ্ঞানী।
উচ্চ ফলনশীল জাতের '#হরি' ধানের আবিষ্কারক, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক #হরিপদ_কাপালী দেহত্যাগ করেছন। গতকাল ০৫//০৬/১৭ ইং তারিখে ঝিনাইদহের নিজ বাড়িতে মারা যান ৯৫ বছর বয়সী এ #গুণীজন। তার মৃত্যু কৃষি পরিবারে অপূরণীয় ক্ষতি বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
আবিস্কারের ইতিহাস :
হরিপদ কাপালী ১৯৯৯ সালে নিজের ধানের জমিতে একটি $ছড়া তার নজর কাড়ে। ধানের গোছা বেশ #পুষ্ট এবং গাছের সংখ্যা #তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছড়াটি তিনি #নজরদাড়িতে রাখলেন। ধানের বাইল (ছরা) বের হলে তিনি দেখতে পান বাইলগুলো তুলনামূলকভাবে অন্য ধানের চেয়ে দীর্ঘ, এবং প্রতিটি বাইলে ধানের #সংখ্যাও বেশি। ধান পাকলে তিনি #ছড়াটিকে আলাদা করে #বীজ ধান হিসেবে রেখে দিলেন। পরের মৌসুমে এগুলো আলাদা করে #আবাদ করলেন এবং $আশাতীত ফলন পেলেন। এভাবে তিনি ধানের প্রতিবছর জমিতে আবাদ বাড়িয়ে চললেন। আর নিজের অজান্তেই উদ্ভাবন করলেন এক নতুন প্রজাতির ধান। মূলতঃ তিনি নিজের অজান্তেই #ডারউইনের আবিস্কৃত #কৃত্রিম নির্বাচনের একটি সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন প্রান্তিক কৃষক হরিপদ কাপালি। পরবর্তীতে যা #হরি_ধান নামে পরিচিতি লাভ করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার #আসাননগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন হরিপদ কাপালী। যার আবিষ্কৃত হরি ধানের বিঘাপ্রতি ফলন ছিলো ২০ থেকে ২২ #মণ। উচ্চ রোগপ্রতিরোধ #ক্ষমতা সম্পন্ন এ ধানের #উৎপাদন খরচও অন্যান্য ধানের চেয়ে প্রায় #অর্ধেক। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তার নাম আলোচনায় আসে দেশ-বিদেশে।
গবেষণা শেষে এ ধানটিকে স্বীকৃতি দেয় '#বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট'। তার নামের সাথে মিল রেখে এ জাতের নামকরণ হয় 'হরিধান'। কৃষিখাতে অসামান্য অবদানের জন্য #জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন হরিদপ কাপালী। সরকারের পক্ষ থেকে তৈরি করে দেয়া বাড়িতে স্ত্রী সুনিতা রানী ও পালিত ছেলে রূপকুমারকে নিয়ে থাকতেন তিনি।
বুধবার রাতে, এই বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হরিদপ কাপালী। ৯৫ বছর বয়সী গুণী এই মানুষটি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন বলে জানান স্বজনরা।
#কৃষিবন্ধু হরিপদ কাপালীর মৃত্যুতে শোকাহত স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলার কৃষকরা। শোক জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারাও।
এদিকে, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে, হরিপদ কাপালীকে চুয়াডাঙ্গার আলীয়ারপুর শ্মশানঘাটে সমাহিত করা হয়। এসময় পরিবারের সদস্য, জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
♦তথ্যসূত্র :
#হরিধানের স্রষ্টা হরিপদ কাপালি, জনবিজ্ঞান, সংখ্যা ৩, ২০০
